শ্রীরামকৃষ্ণ ও নারী জাগরণ,,,,Sri Ramakrishna and Women's Awakening
,,,সুনীল কুমার দে,,,,
আগেকার দিনে মেয়েদের কে দাসী রূপে দেখা হতো।ছেলে যখন বিয়ে করতে যেতো তখন তার মা বাবাকে বলতো,,আমি তোমাদের জন্য দাসী আনতে যাচ্ছি।মেয়েদের কাজ ছিলো ঘরের কাজ করা ও ছেলে উৎপাদন করা।আগেকার দিনে মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারতো না,কোনো ধর্মস্থানে যেতে পারতো না,কোনো পূজা পাঠ বা ভগবানের নাম গান করতে পারতো না।তাই একদিন স্বামী বিবেকানন্দ দুঃখ করে বলেছিলেন,,,এ দেশ সকলের অধম কেন,না এখানে মেয়েদের কে অবমাননা করা হয় বলে।মেয়েদের কে কেবল মাত্র সন্তান উৎপাদনের মিশিন মাত্র মনে করা হয়।
ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ যেদিন থেকে আবির্ভূত হন সেদিন থেকে নারী জাগরণ শুরু হয়।শ্রীরামকৃষ্ণ প্রথম ব্যক্তি যিনি নারীদের সন্মান ফিরিয়ে আনলেন।নারীকে সন্মান দিলেন ও নারীকে পুজো করলেন।আমরা তার জীবনে দেখেছি তিনি ছোটো বেলায় ব্রাহ্মণের ছেলে হয়েও একজন কামারের মেয়ে ধনী কামারিণী কে ভিক্ষা মা করে সন্মান দিয়েছিলেন।সাধক জীবনে দেখি তিনি মা কালীর সাধনা করে মাতৃ শক্তি কে সন্মান দিয়েছিলেন।তিনি রানী রাসমণীর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত দক্ষিনেশ্বর কালী বাড়িতে পূজারী হয়ে নারীকে সন্মান দিয়েছিলেন।তিনি ভৈরবী ব্রাহ্মণী নামে একজন নারীকে তন্ত্র গুরু করে নারিকে বিশেষ সন্মান দিয়েছিলেন।তিনি নিজের ধর্ম পত্নী মা সারদামনি কে মায়ের আসনে বসিয়ে পুজো করে নারীকে শ্রেষ্ঠ আসন দিয়েছিলেন ও ইতিহাস তৈরি করেছিলেন।মানব ইতিহাসে এর আগে এই ঘটনা ঘটে নি।তিনি নারীকে ভোগ করেন নি তিনি নারীকে পুজো করেছিলেন।ঠাকুর রামকৃষ্ণ তার ধর্ম পত্নী সারদা মাকে তুই বলে কোনোদিন সম্বোধন করতেন না।একদিন ভুল করে তুই বলে ফেলেছিলেন তারজন্য তিনি মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন ও বার বার দুঃখ করেছিলেন।শ্রীরামকৃষ্ণ বারবনিতা নটি বিনোদিনী কে চৈতন্য হউক বলে আশীর্বাদ করেছিলেন ,তাকে নুতন জীবন দান করেছিলেন।শ্রীরামকৃষ্ণ মেয়েদের কে চিকের আড়াল থেকে বাইরে নিয়ে এসেছিলেন,ভগবানের নাম করার অনুমতি দিয়েছিলেন।এমন কি মেয়েদের কে সন্ন্যাস ধর্মেও দীক্ষিত করে ছিলেন গৌরি মা,যোগেশ্বরী মা আদি তার প্রমান।ঠাকুর রামকৃষ্ণ প্রায়ই কামিনী কাঞ্চনের কথা বলতেন।এর মানে তিনি নারী বিদ্বেষী ছিলেন না।কামিনী কাঞ্চন ত্যাগের কথা ত্যাগী ভক্তদের বলতেন,যারা সাধু সন্ন্যাসী তাদের বলতেন।গৃহী ভক্তদের কে মনে ত্যাগ করার কথা বলতেন।কামিনী অর্থে কাম বা কামনা মেয়ে নয়।ঠাকুর রামকৃষ্ণ নারী জাতিকে যেভাবে মান,সন্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন আজ পর্যন্ত কোনো মানুষ বা অবতার দিতে পারেন নি।প্রকৃত পক্ষে নারী জাগরণের উদ্যক্তা ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণই।